স্বদেশ ডেস্ক:
প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ চেয়ে ফেসবুকে ‘অবমাননাকর’ মন্তব্য করা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আশরাফুল ইসলাম আশরাফ নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে পার পেলেন। ভবিষ্যতের জন্য তাকে সতর্ক করে দিয়ে আদালত অবমাননা প্রশ্নে জারি করা কারণ দর্শাও নোটিসটি পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলীর নেতৃত্বাধীন ভার্চুয়াল আপিল বেঞ্চ আইনজীবী আশরাফ ক্ষমার আবেদন গ্রহণ করে এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। আশরাফুল ইসলামের পক্ষে ছিলেন শেখ আওসাফুর রহমান বুলু। বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খন্দকার রেজা-ই-রাকিব।
পরে আইনজীবী আশরাফুল ইসলাম আশরাফ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মহামান্য আপিল বিভাগ আদালত অবমানননার অভিযোগ আনার প্রশ্নে এবং দেশের যে কোনো আদালতে আমার পেশা পরিচালনা থেকে বিরত রাখার প্রশ্নে যে নোটিস ইস্যু করেছিলেন, গত ৫ আগস্ট তার জবাব হলফনামা আকারে দাখিল করেছিলাম। আজ সে হলফনামাটি প্রত্যাহার চাওয়ার পাশাপাশি নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করে অবেদন করেছিলাম। সে অবেদনটি গ্রহণ করে হলফনামাটি প্রত্যাহারের অনুমতি দিয়েছেন আপিল বিভাগ। যেহেতু আদালত আমার আবেদনটি গ্রহণ করেছেন, তাই আইন পেশা চালিয়ে যেতে আর কোনো সমস্যা থাকছে না।’
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের পদত্যাগ দাবি করে ফেসবুকে ‘অবমাননাকর’ মন্তব্য করায় গত ১৫ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আশরাফুল ইসলাম আশরাফকে তলব করে আপিল বিভাগ। কেন তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হবে না, ৮ আগস্ট আপিল বিভাগে হাজির হয়ে সেই ব্যাখ্যা দিতে বলা হয় তাকে। ওই সময় পর্যন্ত তাকে আইন পেশা থেকে বিরত থাকতেও বলে সর্বোচ্চ আদালত।
আর বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) আইনজীবী আশরাফের ওই ফেসবুক পোস্ট অপসারণ করে তার সবগুলো ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ওইদিন আইনজীবী আশরাফুল ইসলাম আশরাফের ফেসবুক পোস্টটি নজরে আনলে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারকের আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারক মোহাম্মদ ইমান আলী সেদিন উষ্মা প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘আইনজীবী মো. আশরাফুল ইসলাম আশরাফের ফেসবুক স্টেটমেন্ট মারাত্মক অবমাননাকর। তার এই স্টেটমেন্ট সরাসরি প্রধান বিচারপতি এবং সুপ্রিম কোর্টকে আঘাত করেছে।’
আশরাফ আদালতের অদেশ অনুযায়ী গত ৮ অগাস্ট আপিল বিভাগে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দাখিলের জন্য সময় চাইলে আদালত তাকে সময় দেয়। তারই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চান এই আইনজীবী।